আরশাদুল ইসলাম ঝন্টু কেশবপুর যশোরঃ
যশোরের কেশবপুর বুড়িহাটি গ্রামে ভুয়া মুক্তিযুদ্ধা মোসলেম উদ্দিনের জাল সনদ দেখিয়ে মুক্তিযুদ্ধা কোটায় তার পরিবারের ৪জন সরকারি চাকুরী করছে। দল ক্ষমতায় থাকার কারণে এতদিন কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়নি। এলাকাবাসী মোসলেম উদ্দিনের ভুয়া মুক্তিযুদ্ধের সনদ বাতিলের দাবি মন্ত্রনালয়ে অভিযোগ করেছেন।
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ সুত্রে জানাগেছে কেশবপুর উপজেলার হাসানপুর ইউনিয়নের বুড়িহাটি গ্রামের মৃত মাহাতাব উদ্দিনের ছেলে বুড়িহাটি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অবসার প্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ মোসলেম উদ্দিন একজন স্বীকৃত ভুয়া মুক্তিযুদ্ধা। তাঁর ভুয়া মুক্তিযুদ্ধের সনদ দেখিয়ে তিনি সরকারের ভাতাসহ সকল সুযোগ সুবিধা ভোগ করে আসছে। এমনকি এলাকার বহু মানুষকে জাল ও ভুয়া মুক্তিযুদ্ধের সনদ তৈরি করে তাদেরকে মুক্তিযোদ্ধা বানিয়ে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন। তাছাড়া মোসলেম উদ্দিন জাল- জালিয়াতি করে বুড়িহাটি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি হওয়ার আগে ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোঃ শাহাজান আলীকে ব্যাক্তিগত আক্রসে সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করে। এবং তিনি ওই প্রতিষ্ঠানে ৫ জনকে নিয়োগ দিতে যেয়ে ৮ জনের নিকট থেকে প্রায় কোটি টাকার উর্দ্ধে নিয়োগ বানিজ্য করেছে।
এদিকে ভুয়া মুক্তিযুদ্ধের সনদ দেখিয়ে মোসলেম উদ্দিনের পরিবারের ৪ জন সদস্য বিভিন্ন স্থানে সরকারি চাকুরী করছে। এরমধ্যে তার ১ম পুত্র আক্তারুজ্জামান তুহিন বর্তমানে যশোর টেকনিক্যাল কলেজের অধ্যক্ষ হিসাবে কর্মরত আছেন। তিনি বুড়িহাটি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সভাপতি থাকা অবস্থায় প্রায় হাঁপ ডজন শিক্ষক নিয়োগ দিয়ে কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্যের অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে । তাঁর ২য় পুত্র মোঃ লতিফ উজ্জামান ভুয়া মুক্তিযুদ্ধের সনদ দেখিয়ে পোষ্যকোটায় জাতীয় সংসদ ভবনের চর্তুথ্য শ্রেণীর কর্মচারী পদে চাকুরী করে তাঁর পিতার যাবতীয় অন্যায় কাজের সহযোগিতা করেছেন। একইভাবে তার ৩য় পুত্র মোঃ শহিদুজ্জামান শহিন হাসানপুর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি। তিনি গত ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনীত নৌকার প্রার্থী হয়ে ভোট করে জামানত হারান। সে বুড়িহাটি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের ল্যাব অ্যাসিস্ট্যান্ট পদে নিয়োগ নিয়ে তার পিতার যাবতীয় অপকর্মের সহযোগিতা করেছেন। তার দাপটে বিদ্যালয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পায়না। এবং শহিদুজ্জামান শহিনের কন্যা ভুয়া মুক্তিযুদ্ধা মোসলেম উদ্দিনের পুতনী তাহেরা জামান মুক্তিযোদ্ধার পোষ্য কোটায় পরিবার পরিকল্পনা বিভাগের সাগরদাঁড়ি ইউনিয়ন পরিবার কল্যাণ সহকারী পদে নিয়োগ নিয়ে চাকুরী করছে।
বুড়িহাটি বহুমুখী মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য আজব আলী বলেন মোসলেম উদ্দিন একজন স্বীকৃত ভুয়া মুক্তিযুদ্ধা। তিনি সম্পূর্ণ অবৈধ ভাবে সভাপতি নির্বাচিত হয়ে অনিয়ম দূর্নীতি করে বিদ্যালয় থেকে কোটি কোটি টাকার নিয়োগ বানিজ্য করেছে। এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে পুঁজি করে সে এবং তার ছেলেরা এলাকায় ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করে একের পর এক অপকর্ম করেছে। মুক্তি যোদ্ধা ফজলুর রহমান বলেন মোসলেম উদ্দিন ভুয়া মুক্তি যোদ্ধা তার সাটির্ফিকেট সম্পুর্ন ভুয়া।
এলাকাবাসী ভুয়া মুক্তিযুদ্ধা মোসলেম উদ্দিনের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা বিষয়ক মন্ত্রনালয়ের সচিব বরাবর লিখিত অভিযোগ করেছে। এবং তার পরিবারের সদস্যদের যাবতীয় অন্যায় কাজের বিরুদ্ধে এলাকাবাসী ফুঁসে উঠেছে। এলাকাবাসী তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি জানিয়েছেন।
শেখ হাসিনা সরকারের পতন হওয়ার পরে তারা বিভিন্ন ভাবে আত্নগোপন রয়েছে বলে তাদের বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।